বারো মাসে তেরো পূর্ণিমা

Different-Names-of-moon
Anirban Biswas
Sun, 05/07/2023 - 16:04

চান্দ্রমাস বা চাঁদের তিথি গুলির যোগফল (অর্থাৎ একটি পূর্ণিমার পর থেকে অমাবস্যা হয়ে আর একটি পূর্ণিমার শেষ অবধি) প্রায় সাড়ে ঊনত্রিশ (29.5) দিন। 354 দিনে হয় এই রকম 12টি চান্দ্রমাস। মোটামুটি 365 দিনে সৌর বছর ধরা হলে, সৌর বছরের থেকে 11 দিন কমে হয় 12 টি চান্দ্রমাস। তাই সাধারণ ভাবে চান্দ্রমাস নির্ভর শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠান গুলি প্রতি বছর পূর্ব বছরের থেকে 11 দিন এগিয়ে আসে। কোন ধর্মের অনুষ্ঠান তাই শুধু চান্দ্রমাস নির্ভর হলে কখনো শীত, কখনো গ্রীষ্মে শুধু নয়, কখনো কখনো একই সৌরবছরে দুবার করেও পালিত হতে পারে। আবার কোন কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় সৌর আবর্তনের সাথে সামঞ্জস্য রাখার জন্য বা সৌর মাস গুলিতে অনুষ্ঠান গুলিকে ধরে রাখার জন্য নির্দিষ্ট সৌর মাসের তিথি ধরা হয়, অর্থাৎ  11 দিন কমতে কমতে আগের মাসে চলে এলেই সাড়ে ঊনত্রিশ (29.5) দিন পিছিয়ে (অর্থাৎ 11 দিন না এগিয়ে 18.5 দিন পিছিয়ে যায়) দিয়ে তিথি ঠিক রেখে সৌর মাসে নিয়ে আসা হয়।

অন্য একটা হিসাবও অবশ্য আছে। যাকে বলা হয় মলমাস। এইযে 11 দিনের ঘাটতি, আড়াই (2.5) বছরে সেটা জমে হয় সাড়ে সাতাশ (27.5) দিন বা একটা চান্দ্রমাস এর কাছাকাছি। অর্থাৎ আড়াই (2.5) বছরে  30 টা সৌর মাস হলেও চান্দ্রমাস হয় প্রায় 31 টা। তাহলে প্রতি আড়াই বছরে বা ত্রিশ টা সৌর মাসে এমন একটা মাস থাকবে, যাতে দুটো অমাবস্যা হবে। এই মাস গুলিতে শুভ কাজ করা যাবেনা, এই বিধানে চান্দ্রমাস টিকে বর্জন করে আবার সৌর ও চান্দ্রমাস এর সমন্বয় রক্ষা করা হয়।

এবার আসি চান্দ্রমাস এর দিন বা তিথির আলোচনায়। প্রথমা, দ্বিতীয়া বা অষ্টমী ইত্যাদি তিথি গুলি চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবীর আপেক্ষিক অবস্থানের উপর নির্ভরশীল। আমরা জানি চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই। অন্য বস্তু প্রধানত সূর্য, অল্প পরিমাণে অন্যান্য নক্ষত্রের আলো ও পৃথিবীর থেকে প্রতিফলিত সূর্যের আলো দ্বারা চাঁদ আলোকিত। প্রসঙ্গত বলা যায়, চাঁদের পৃষ্ঠে বসে রাতের আকাশে পৃথিবীর প্রতিফলিত আলোয় বই পড়া যাবে।

moon-phases

 

সূর্য সব সময় পৃথিবীপৃষ্ঠের মত চন্দ্রপৃষ্ঠেরও অর্ধেক অংশ আলোকিত করে। তবে সবসময আমরা পৃথিবী থেকে এই অর্ধ আলোকিত অংশ পুরোটা দেখিনা, শুধুমাত্র চন্দ্র গ্রহণের দিন বা সময় ছাড়া। (যদিও পূর্ণিমার সময় সূর্য দ্বারা চাঁদের আলোকিত অর্ধেক অংশের প্রায় পুরোটা পৃথিবী থেকে দেখা যায়। পূর্ণিমাতে  চাঁদ পৃথিবী সূর্যকে যে তলে প্রদক্ষিণ করে-ক্রান্তিবৃত্ত (ecliptic) সেই তলের উপর বা নিচে থাকার জন্য পৃথিবী থেকে চাঁদের আলোকিত অংশের 100% নয়, কম-বেশি 99.9% আলোকিত দেখায়)। যদি চাঁদ তার কক্ষ পথে পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে আসে, তবে যেদিক টা সূর্য দ্বারা আলোকিত হয়, আমরা পৃথিবী থেকে তার বিপরীত অর্ধ অর্থাৎ অন্ধকার দিকটা দেখি। এই ঘটনাকে অমাবস্যা বলে। আবার চাঁদ পৃথিবীর থেকে সূর্যের বিপরীত দিকে অবস্থান করলে আমরা চাঁদের আলোকিত অংশই দেখি, যা পূর্ণিমা।

এক অমাবস্যা থেকে পূর্ণিমা হয়ে আর এক অমাবস্যা আসা অবধি দিন কে দিন চাঁদের এই আলোকিত অংশের তারতম্য ঘটে। কলা আকৃতির আলোকিত অংশ বা তার বিপরীত অর্থাৎ কলা আকৃতির অন্ধকার অংশ যেমন থাকে, তেমন থাকে ইংরেজি অক্ষর 'D' এর মত অর্ধেক আলোকিত বা অন্ধকার অংশ। এগুলিকে যথাক্রমে ইংরেজি মতে ক্রিসেন্ট, গিব্বাস ও কোয়ার্টার বলা হয়, যদিও বাংলায় প্রতিপদ, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া ইত্যাদি ও দুটি পক্ষ বলি। পূর্ণিমা থেকে অমাবস্যা কৃষ্ণ পক্ষ ও অমাবস্যা থেকে পূর্ণিমা শুক্ল পক্ষ।  29.5 দিনের চক্রের হিসাব করে আরও নির্দিষ্ট ভাবে বোঝাতে ক্রিসেন্ট ও গিব্বাস শব্দ দুটির সাথে ওয়েনিং (ক্ষয়িষ্ণু) ও ওয়েক্সিং (বর্ধিষ্ণু) শব্দ দুটি যোগ করা হয়। আর কোয়ার্টার (যদিও এই সময় চাঁদ অর্দ্ধ আকারের থাকে) দুটিকে প্রথম ও তৃতীয় বা শেষ কোয়ার্টার বলা হয়।

ক্রমানুসারে চাঁদের আটটি পর্যায়কে আমরা বলতে পারি,

  1. অমাবস্যা
  2. ওয়েক্সিং (বর্ধিষ্ণু) ক্রিসেন্ট
  3.  প্রথম বা ফার্স্ট কোয়ার্টার
  4. ওয়াক্সিং (বর্ধিষ্ণু) গিব্বাস চাঁদ
  5. পূর্ণিমা
  6. ওয়েনিং (ক্ষয়িষ্ণু) গিব্বাস চাঁদ
  7. তৃতীয় বা শেষ (থার্ড বা লাস্ট) কোয়ার্টার
  8. ওয়েনিং (ক্ষয়িষ্ণু) ক্রিসেন্ট
     

পূর্ণিমা, অমাবস্যা বা কোয়ার্টার যদিও একটি নির্দিষ্ট দিন, যখন চাঁদ পুরো আলোকিত, পুরো অন্ধকার বা অর্দ্ধালোকিত দেখায়, কিন্তু ক্রিসেন্ট ও গিব্বাসের সময়কাল মোটামুটি এক সপ্তাহ।

মাসের হিসাব প্রথমে এই 29.5 দিনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে 29 বা 30 দিনের ছিল। পরে সৌর বছরের সাথে সমন্বয় রাখতে অতিরিক্ত দিন যোগ করা হয় এবং 12 মাসে এক বছর ধরা হয়।

Moons-endless-dance

 

চাঁদের তিথি গুলির যোগফল আগেই বলা হয়েছে প্রায় সাড়ে ঊনত্রিশ (29.5) দিন। কিন্তু প্রসঙ্গত বলা যায়, চাঁদ পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় 27.3 দিন। মাসের দিন সংখ্যা ও তিথির সম্মিলিত দিন যেহেতু সমান নয়, মাসের দিন সংখ্যা বেশি, তাই কোন কোন মাসে দুইটি পূর্ণিমা হয়। মাসের এই দ্বিতীয় পূর্ণিমাটিকে ব্লু মুন বলা হয়। মোটামুটি প্রতি ত্রিশ (30) মাসে একটি ব্লু মুন হয়, যার থেকে আসে 'once in a blue moon' ইংরেজি প্রবাদটি। অন্য একটি মতবাদ অনুযায়ী, প্রতি কোয়ার্টার বা ত্রৈমাসিক সময়ান্তরে তিনটির বদলে কখনও কখনও চারটি পূর্ণিমা হয়, যার তৃতীয়টিকে বলা হয় ব্লু মুন।

বাকী রইলো বছরের অন্য বারোটি পূর্ণিমা, যাদের এক একটি মাসের প্রতিনিধি ধরা যায়। বাংলায় অবশ্য মাসের নাম দিয়েই পূর্ণিমার নামকরণ, আবার মাসের নাম ওই পূর্ণিমার সময় চাঁদ যে নক্ষত্রে অবস্থান করে সেই নক্ষত্রের নামানুসারে। কিন্তু ইংরেজিতে এদের প্রত্যেকের বিশেষ বিশেষ আলাদা নাম আছে, যার সাথে মাসের যোগ থাকলেও সরাসরি মাসের নামের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়। তৎকালীন মার্কিন দেশের উপজাতির সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই নাম।

জানুয়ারি - Wolf (নেকড়ে) Moon। মাঝশীতে ক্ষুধার্ত নেকড়েদের খাদ্যাভাবে আর্তনাদ থেকেই এই নাম। এই পূর্ণিমাকে old moon বা ice moon ও বলা হয়।

ফেব্রুয়ারি - Snow (তুষার) Moon। উত্তর আমেরিকার এই সময়ের প্রবল শৈত্য ও তুষারময় আবহাওয়া এই নাম দিয়েছে। Storm moon ও Hunger Moon ও বলা হয়।

মার্চ - Worm (কৃমি) Moon। এই সময় বরফ গলে গেলে জমিতে নানান রকম কেঁচো জাতীয় প্রাণীর আবির্ভাব ঘটায় এই নাম। এই পূর্ণিমার অন্য নামগুলি হলো, Chaste moon, Death moon, Crust moon and Sap moon (ম্যাপল গাছ ছাঁটার কারনে).

এপ্রিল - Pink (গোলাপী) moon। উত্তর আমেরিকার উপজাতীয়রা এই পূর্ণিমাকে এক ধরনের গোলাপী রঙ এর বন্য ফুল ফোটার কারনে এই নামে ডাকেন। এছাড়াও এই পূর্ণিমা কে Sprouting grass moon, Egg moon, এবং Fish moon ও বলে।

মে - flower (ফুল) moon। আমেরিকার বসন্তের পূর্ণতায় ফুলের সমারোহের জন্যই এই নাম। অন্য নামগুলি হলো Hare moon, Corn planting moon এবং Milk moon.

জুন - Strawberry (স্ট্রবেরি) Moon। উত্তর আমেরিকায় এইসময় স্ট্রবেরির ফসল তোলা হয়। তাই এই মাসের পূর্ণিমার এই নাম। ইউরোপে এটিকে Rose (গোলাপ) moon বলে। গ্রীষ্মের শুরু বলে অনেক জায়গায় এটিকে Hot moon ও বলা হয়।

জুলাই - Buck (পুরুষ হরিণ) Moon। পুরুষ হরিণরা প্রত্যেক বছর তাদের শিং ঝড়িয়ে ফেলে, এবং এই সময় তাদের নতুন শিং গজায়, তাই উত্তর আমেরিকায় এই পূর্ণিমাকে এই নাম দেওয়া হয়।

গ্রীষ্ম কালীন ঝড়ের জন্য এর অন্য নাম Thunder moon. এই পূর্ণিমাকে Hay moon ও বলা হয় ফসল বা খড় ঘরে তোলার সময় বলে।

আগস্ট - Sturgeon (এক রকম মাছ) Moon। উত্তর আমেরিকার মৎস্য শিকারি উপজাতীয়রা এই মাসের পূর্ণিমাটিকে Sturgeon Moon বলে, কারণ এই সময় প্রচুর Sturgeon মাছ পাওয়া যেত। এছাড়াও এই পূর্ণিমাকে Green corn moon, Grain moon, এবং Red moon (গ্রীষ্মের কুয়াশার জন্য লালচে আভা দেখা যায়)।

সেপ্টেম্বর - Full Corn (পুরো ভুট্টা শস্য) Moon। উত্তর আমেরিকায় শীত শুরু হওয়ার আগে মাঠের সমস্ত ফসল ঘরে তুলে নেওয়া হয় বলে এই নাম। এই সময় সূর্যকে উজ্জ্বল দেখায় এবং সূর্য একটু আগেই উদয় হয়, যার জন্য কৃষকরা একটু রাত অবধি মাঠে ফসল তোলার কাজ করতে পারে। এই পূর্ণিমাকে অনেক সময় Barley moon ও বলা হয়। এই পূর্ণিমা টি কখনও কখনও জল বিষুব (autumnal equinox) এর কাছাকাছি হওয়ায় 'Harvest moon' ও বলা হয়।

অক্টোবর - Hunter's (শিকারি) Moon। গ্রীষ্মের আহারে হরিণ ও শৃগলরা স্ফীত হওয়ায় সহজেই শিকারে পরিণত হয়। Harvest moon এর মত Hunter moon ও উজ্জ্বল এবং বেশিক্ষণ আকাশে থাকায় রাত্রেও শিকারের সুবিধা হয়। এছাড়াও এই পূর্ণিমাকে Travel moon এবং Dying grass moon ও বলা হয়।

নভেম্বর - Beaver (বীভার এক রকম প্রাণী) Moon। কেউ বলেন আমেরিকায় এই সময় বীভার ধরার জন্য ফাঁদ পাতা হতো, আবার অন্যরা বলেন বীভার জন্তুরা এই সময় তাদের শীতকালীন শিকার ধরার জন্য বাঁধ দেওয়ার মত ফাঁদ পাতার কাজে ব্যস্ত থাকত।এই পূর্ণিমার আরও একটি নাম Frost moon।

ডিসেম্বর - Cold (ঠান্ডা) Moon। আসন্ন শীতের দিনগুলির কথা ভেবে এই পূর্ণিমার এই নাম। এছাড়াও এই পূর্ণিমা কে Long night moon এবং Oak moon নামেও চিহ্নিত করা হয়।

Different-Names-of-moon

 

পৃথিবীকে ঘিরে চাঁদের কক্ষ পথটি উপবৃত্তাকার, এই কক্ষ পথে পৃথিবীর নিকটতম বিন্দুকে অনুভূ (perigee) ও দূরতম বিন্দুকে অপভূ (apogee) বলে।

যখন একটি পূর্ণিমা বা অমাবস্যা চাঁদের অনুভূর (perigee) কাছাকাছি ঘটে তখন কাছে থাকার জন্য চাঁদকে বড় দেখায়। তাই এটি একটি Supermoon (সুপারমুন) হিসাবে পরিচিত। অন্যদিকে, যখন একটি পূর্ণিমা বা অমাবস্যা চাঁদের অপভূর (apogee) কাছাকাছি ঘটে ও চাঁদকে ছোট দেখায়, তখন এটি Micromoon (মাইক্রোমুন) নামে পরিচিত।

কোন পূর্ণিমায় পূর্ণ গ্রাস চন্দ্র গ্রহণ হলে চাঁদকে তামাটে লাল দেখায়। এই পূর্ণিমার চাঁদকে বলা হয় Red moon or Blood moon (রেড মুন বা ব্লাড মুন)।

পূর্ণ চন্দ্র গ্রহণের সময় চাঁদ পুরোপুরি পৃথিবীর ঘন কালো ছায়ায় ঢাকা পড়ে যায়। সূর্যের আলো সরাসরি পৃথিবী দ্বারা অবরুদ্ধ হয়। 

কিন্তু কিছু আলো পৃথিবীর বায়ু মণ্ডল দিয়ে চাঁদের দিকে যায়। বিজ্ঞানের ভাষায় এই আলোক রশ্মি বায়ুমণ্ডলে ভাসমান বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার সাথে ধাক্কা খেয়ে বিচ্ছুরিত হয়।(কণাগুলির ব্যাসার্দ্ধ বিকিরণের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য এর প্রায় এক-দশমাংশেরও কম হয়) আলোক বর্ণালীর ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্য তথা বেশি কম্পাঙ্ক বা বেশি শক্তি বিশিষ্ট কণা গুলি বেশি বিচ্ছুরিত হয়ে প্রায় বাঁকা পথে বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু দীর্ঘ তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট কম কম্পাঙ্ক এ কম শক্তির আলোকরশ্মি গুলি কম বিচ্ছুরিত হয়ে প্রায় সোজা পথে চাঁদের ওপর পড়ে। সূর্যালোকের বর্ণালীর (spectrum- রামধনুর রঙ) বেগুনি দিকের রঙ গুলির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ক্ষুদ্র। এবং লালের দিকের গুলি দীর্ঘ। তাই লাল বা কমলা রঙের আলো কম বিচ্ছুরিত হয়ে চন্দ্র পৃষ্ঠে পড়ার জন্য চাঁদের রঙ কমলা বা লাল দেখায়। সূর্যোদয় বা সূর্যাস্ত এর সময় যে কারণে সূর্যকে লাল বা কমলা লাগে। এই ঘটনা কে র‍্যালে স্ক্যাটারিং (Rayleigh scattering) বলে।

যে তরঙ্গের শক্তি যত বেশি, সে তত বেশি বিচ্ছুরিত (scatter) হবে। কারণ এরোসল (aerosol) বা অন্যান্য ক্ষুদ্র বায়ুমণ্ডলে ভাসমান গ্যাস এর কণার সাথে ধাক্কা খেলে বেশি শক্তির আলো বেশি বিচ্ছুরিত হবে। র‌্যালে স্ক্যাটারিং ‘ল’ অনুযায়ী-বিচ্ছুরণ, আপতিত বিকিরণের তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের চতুর্থ মাত্রার (4th power) ব্যস্তনুপাতে (inversely proportion) সম্পর্কিত।  তাই বেগুনি, নীল তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ক্ষুদ্র বলে বেশি বিচ্ছুরিত হয়, ও লালের ক্ষেত্রে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য দীর্ঘ বলে কম বিচ্ছুরিত হয়। আবার পূর্ণিমার চাঁদ দিগন্তে থাকলে, একই কারণে তার রঙ কমলা দেখতে লাগে। তখন তাকে Orange (কমলা) moon বলে।

তাই বারো মাসে বলা যায় সব সময় না হলেও মাঝে মাঝে তেরো পূর্ণিমা দেখা যায়। সে পূর্ণিমাকে once in a blue moon বলা হোক বা অন্যভাবে মলমাসের নিয়মেই বাঁধি, ব্যাপারটা বেশ মজাদার। প্রত্যেক পূর্ণিমাই নিজের নিজের মাহাত্মে অনুপম। তাই, এবার থেকে পূর্ণিমা দেখি নতুন ভাবে।

Anirban Biswas

Most Recent